মূলত একটি সতর্কবার্তা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে সিরিয়ায় সাম্প্রতিক বিমান হামলাগুলো চালিয়েছে ইসরায়েল—এমনটাই বলছে তেল আবিব। উদ্দেশ্য, সিরিয়ার সেনাবাহিনী যাতে দক্ষিণাঞ্চলে মোতায়েন করা না হয়। এ এলাকায় ইসরায়েল একটি বেসামরিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চায়।
ইসরায়েলের উদ্বেগ, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে দেশটির বর্তমান সরকারের অনুগত যোদ্ধারা অবস্থান নিতে পারেন। এখান থেকে ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির দূরত্ব বেশি দূরে নয়। তাই নিজেদের উত্তর সীমান্তের এ অঞ্চলে শারা সরকারের অনুগত যোদ্ধাদের উপস্থিতি নিয়েই তাদের যত মাথাব্যথা।
ইসরায়েলের গত ১৫ জুলাইয়ের বিমান হামলা সুয়েইদা প্রদেশে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও সামরিক যানবাহনে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ১৬ জুলাই হামলার পরিসর বাড়ানো হয়। এদিন রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সেনা সদর দপ্তর ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের আশপাশে হামলা চালায় ইসরায়েল। সিরিয়া ও দেশটির কিছু মিত্রদেশ এসব হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
১৬ জুলাইয়ের হামলাগুলো ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে দেশটিতে চালানো হামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল। গত ডিসেম্বরে বাশার উচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে দেশটির বিভিন্ন স্থানে ছয় শতাধিক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইতিমধ্যে গোলান মালভূমির জাতিসংঘ-নিয়ন্ত্রিত একটি বাফার জোনে (নিরপেক্ষ অঞ্চল) সেনা পাঠায় সিরিয়া।
১৬ জুলাই দামেস্কে বিমান হামলা শুরুর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ লেখেন, ‘দামেস্কের প্রতি সতর্কবার্তা শেষ হয়েছে। এখন যন্ত্রণাদায়ক আঘাত শুরু হবে।’
সিরিয়ার সামরিক সদর দপ্তরে হামলার দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করেছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেল। চ্যানেলটির স্টুডিও ওই ভবনের ঠিক উল্টো দিকে অবস্থিত। সম্প্রচারের দেখা যায়, হামলার কারণে উপস্থাপক স্টুডিও ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।
১৬ জুলাই হামলার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই সহিংসতা নিয়ে ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। ওই দিনই তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমরা এমন কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপের বিষয়ে সম্মত হয়েছি, যা আজ রাতেই এ ভয়াবহ ও দুঃখজনক পরিস্থিতির অবসান ঘটাবে।’