যাঁরা জমি কিনেছেন, তাঁরা জানান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও শাহমখদুম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত আলী পুকুরটি কিনে ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তিনি পলাতক। এ জন্য তাঁর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরের আহম্মদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আরাজি শিরোইল মৌজার পুকুরটির আরএস খতিয়ান নম্বর ৪৪, জেএল নম্বর ১১, শ্রেণি পুকুর, যা বহুকাল ধরে ‘মেহেরের পুকুর’ নামে পরিচিত। ২০২২ সালের মার্চে পুকুরটির অংশবিশেষ মূল মালিকের থেকে কিনে নেন নগরের রানীনগর এলাকার মো. শহিদুল ইসলাম ও তালাইমারী এলাকার তৌফিক হাসান। এরপর গত বছরের ৫ জুন বোয়ালিয়া ভূমি কার্যালয়ে পুকুরটির রকম বদলে ভিটা (আবাসিক) করে ফেলা হয়। এখানে শহীদুলের জমির পরিমাণ ৯ দশমিক শূন্য ৫৫ শতাংশ। তৌফিক হাসানের জমির পরিমাণ শূন্য ৮০৬ শতাংশ।
গত ২৫ আগস্ট ওই পুকুরের ভরাট বন্ধের দাবিতে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে একটি আবেদন করেন এলাকাবাসী। আবেদনে তাঁরা পুকুর ভরাট ও জমির শ্রেণি জালিয়াতির অভিযোগ করেন। এতে বলা হয়, রাজশাহী নগরে পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের চার দফা নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। আরাজি শিরোইল মৌজার পুকুরটি আহম্মদপুর, সেখেরচক, বাজে কাজলা, পঞ্চবটি এলাকার মানুষ ব্যবহার করেন। বিশেষ করে পাশের নদী রক্ষা বাঁধের ওপারের বাসিন্দারা পদ্মা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় পুকুরটির পানি ব্যবহার করেন। ২০২০ সালের মার্চে একবার রাতারাতি বালু দিয়ে ভরাটের তৎপরতা চালালে এলাকাবাসী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত ১৩ আগস্ট পুলিশ প্রশাসনের এলোমেলো থাকার সুযোগে আবার ভরাটের তৎপরতা শুরু হয়। পুকুরের মাঝবরাবর টিনের বেড়া দেয়। বিষয়টি সেনাবাহিনীর নজরে আনলে ভরাটকারীরা পালিয়ে যায়। কিন্তু তারা এখনো তৎপর।