পাহাড়ের অন্যতম সমস্যা ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ২০০১ সালে গঠন করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন। এ পর্যন্ত ছয়বার কমিশনের চেয়ারম্যান পরিবর্তন হলেও ভূমি বিরোধ সমস্যা সমাধানে কোনো সফলতা আসেনি। তিন পার্বত্য জেলা থেকে ভূমি বিরোধ নিয়ে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ২২ হাজার দরখাস্ত জমা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব আবেদনের সুরাহা করা হয়নি। এমনকি কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি বৈঠকও করতে পারেনি স্থানীয় কিছু বাঙালি সংগঠনের বিরোধিতার কারণে।
গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরও সক্রিয় ভূমিকা ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দারা ভেবেছিলেন, সেখানকার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য দূর করতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু সেটি নেওয়া হয়নি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি গ্রাফিতিতে ‘আদিবাসী’ কথা লেখা ছিল। পরে সেটি পাঠ্যবইয়েও স্থান পায়। কিন্তু বই প্রকাশের কয়েক দিন পর অজ্ঞাত কারণে সেই গ্রাফিতি তুলে নেওয়া হয়।
পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাময়িক স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু সেই স্বস্তি স্থায়ী শান্তিতে রূপ নিতে পারে তখনই, যখন পার্বত্য চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে। সেখানে ভূমি ও পাহাড় দখল বন্ধ হবে। পাহাড়িরাও দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মতো সম–অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারবে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে সেই চাওয়া কি অন্যায্য হবে?
● সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি