কাজীপাড়ার তিনটি পাহাড়ি রেস্তোরাঁর একটি সিএইচটি কালিনারি। ঢাকার দুই প্রান্ত উত্তরা কিংবা মতিঝিল থেকে রেস্তোরাঁটিতে পৌঁছাতে হলে আপনাকে কাজীপাড়া মেট্রোস্টেশনের পূর্ব পাশে নামতে হবে। এরপর একটু হেঁটে পৌঁছাতে হবে মেট্রোর ২৮২ নম্বর পিলার বরাবর। অতঃপর বাগানবিলাসের রাস্তা ধরে কয়েক কদম হাঁটুন, হাতের বাঁয়ে পড়বে সিএইচটি কালিনারি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় সব পদের জনপ্রিয় খাবার পাওয়া যায় এখানে। রোজেলাপাতা দিয়ে ঝোল ঝোল মুরগি (হুরো আমিলে জুস) থেকে বিভিন্ন ধরনের সবজি পদ—বেগুন গাভি, রোজেলা কারি, আদা ফুল, হলুদ ফুল আর বৈচিত্র্যময় পাহাড়ি ভর্তা-শুঁটকি গরম-গরম পাবেন রেস্তোরাঁটিতে।
টিপটপ স্নিগ্ধ খাবারঘরটি গড়ে ওঠার একটি ছোট গল্প আছে। আড্ডাচ্ছলে সে কথাই বলছিলেন সিএইচটি কালিনারির বর্তমান মালিক জুম্মান চাকমা। তিনি বলেন, ‘মূলত চাকরির খোঁজে গত করোনার আগে আগে ঢাকায় আসি। চাকরি মিলছে না। এর মধ্যে একদিন গায়ে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এল। ভয় পেয়ে গেলাম। নিঃসঙ্গ দুপুরে মাকে খুব মনে পড়ল। আর মনে পড়ল, জ্বর হলে মা রোজেলা–চা করতেন। ভাতের সঙ্গে তরকারি থাকত রোজেলা মুরগি কারি। শরীরে একটা খুব বল আসত। জ্বর এমনিতেই সেরে যেত। এরপর যত দিন গেছে, ঢাকার একঘেয়ে খাদ্যাভ্যাসে বিরক্ত হয়েছি। আর মায়ের বিশেষ বিশেষ পদগুলো খুব মিস করেছি। বলতে পারেন, মায়ের মমতামাখানো পদগুলোই আমি প্রতিদিন সিএইচটি কালিনারিতে রাঁধতে চাই। পাহাড়-পর্বত-সমতলের মানুষকে বীর চট্টলার বৈচিত্র্যময় খাদ্যের স্বাদ পাতে তুলে দিতে চাই।’
সিএইচটি কালিনারিতে ষড়্ঋতু ধরে খাবারের পদ রান্না হয়। যেমন এখন বর্ষাকাল। পাহাড়ে কচি বাঁশকোঁড়ল সহজলভ্য। হলুদ ফুলে ফুলে পাহাড় ছেয়ে গেছে। এখন রেস্তোরাঁটিতে গেলে পাবেন হলুদ ফুলের মাছভর্তা। কচি বাঁশকোঁড়লের বিভিন্ন পদ। এ ছাড়া নিয়মিতভাবে ব্যাম্বু চিকেন, পাজন, সবজির তোজা, শুঁটকি হেবাং, বিলাতি আলু দিয়ে পাহাড়ি মুরগি, শুঁটকি, পাহাড়ি শাক, মাছ ও ভর্তা গরম-গরম পরিবেশন করা হয়। দুজন মিলে, বন্ধুবান্ধব-পরিবারসহ রেস্তোরাঁটিতে যেতে পারেন। খাবারের স্বাদের পাশাপাশি রেস্তোরাঁর শান্ত-স্নিগ্ধ রূপ আপনাকে অন্য রকম আবেশে জড়াবে।
যোগাযোগ: ফেসবুক পেইজ
মুঠোফোন: ০১৭৭৭-১৯৯১১৩