২০১৭ সালে পাকিস্তান যোগ দেয় চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সাংহাই সহযোগিতা সংস্থায়। করাচি-লাহোর গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পের চুক্তি সই হয়। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাশিয়া ও পাকিস্তান প্রথম যৌথ সামরিক মহড়া। ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ এ প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। ২০২৪ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এক বিলিয়ন ডলারের সীমা অতিক্রম করেছে। আফগানিস্তানে তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দেওয়ার মতো আঞ্চলিক ইস্যুতে রাশিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মতৈক্য দেখা যাচ্ছে।
এত সব পরিবর্তনের মধ্যেও একটি বিষয় অপরিবর্তিত থেকে গেছে। পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্ক সব সময়ই রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও পাকিস্তান নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক সমীকরণের অংশ। সম্পর্কটি শক্তি, খাদ্যনিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের মতো ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকলে সমস্যা নেই। তবে তা অস্ত্র বিক্রিতে গেলে পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্ক জটিল হয়ে যায়। কারণ, তা ভারতের জন্য সংবেদনশীল।
ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সূক্ষ্ম কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহ্যগত সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে ভারত পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রচারণায় অংশ নেয়নি। দিল্লিও আশা করে যে মস্কোও ভারতের প্রতি একই ধরনের সমর্থন দেখাবে। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে আইএমএফের মতো পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানের ওপর পাকিস্তানের নির্ভরতা রাশিয়ার জন্য অস্বস্তিকর। পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়া পশ্চিমাদের লাইন মেনে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণকে নিন্দা করেছিলেন। পাকিস্তানের অস্ত্র ও গোলাবারুদও ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানের দুর্বল অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও এ সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তানের তেল শোধনাগারগুলো অনুন্নত হওয়ায়।