কুমিল্লার ইতিহাস–গবেষক আহসানুল কবীর বলেন, বিশ্বযুদ্ধের সময় কৌশলগত কারণে কুমিল্লা সেনানিবাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল। যুদ্ধসরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্র, বিমানঘাঁটি ও ১৯৪৪ সালে ইম্ফলে স্থানান্তরিত হওয়ার আগে ফোরটিনথ আর্মির (চতুর্দশ সেনাবাহিনী) সদর দপ্তর ছিল কুমিল্লায়। জেনারেলদের গুরুত্বপূর্ণ সভাগুলো এখানে হতো। এ জন্য যুদ্ধাহত সৈনিকদের চিকিৎসার জন্য ময়নামতিতে নির্মিত হাসপাতালে আনা হতো। সেখানে মারা যাওয়া সৈনিকদের সমাহিত করতে ১৯৪৩-৪৪ সালে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি বানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন সৈনিককে সমাহিত করা হয়। এর মধ্যে মুসলিম ১৭২ জন, বৌদ্ধ ২৪, হিন্দু ২ ও বাকিরা খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী। তাঁদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৫৭, কানাডার ১২, অস্ট্রেলিয়ার ১২, নিউজিল্যান্ডের ৪, অবিভক্ত ভারতের ১৭১, রোডেশিয়ার ৩, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬; বার্মা, বেলজিয়াম, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ডের ১ জন করে এবং জাপানের ২৪ জন নাগরিকের সমাধি আছে। ১৯৬২ সালে একজন সৈনিকের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তাঁর স্বজনেরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৮১ পর এখন জাপানি ২৪ সৈনিকের দেহাবশেষ নিজ দেশে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।