সাংবাদিক থেকে সমন্বয়ক | প্রথম আলো


আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আমাদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেল। দিনরাত স্ক্রিনে চোখ সবার। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে যাঁরা আন্দোলন থামাতে চেয়েছিলেন, তাঁদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে গ্রামগঞ্জে সমন্বয় তৈরির মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তোলেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের সহায়তায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয় আমাদের। মুক্তির যুদ্ধে হাজারো মানুষ দলীয় পরিচয় ভুলে চলে আসেন এককাতারে। সবার চাওয়া সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ। হাজারো ছাত্র–জনতার হতাহতের বিনিময়ে ৫ আগস্ট তথা ‘৩৬ জুলাই’ মহাপরাক্রমশালী হাসিনা পালাতে বাধ্য হন। ‘৩৫ জুলাই’ সকাল থেকে চোখে ঘুম নেই, টান টান উত্তেজনা, আমি পরদিন লংমার্চে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। এই দিন দেখার জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষা করেছে মানুষ। ঘোষণা দিলাম, বাংলাদেশের মানুষকে আমরা ইতিহাসের সাক্ষী বানাব। অনেক বছর আগে থেকেই আমার খুব ইচ্ছা, গণভবন থেকে হাসিনাকে বের করে আনার সাক্ষী নিজেই হব।

তবে ৫ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওয়াই-ফাই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে একেবারে স্ট্রোক করার পরিস্থিতিতে পড়ে যাই। ভাবছিলাম, আমরা এবারও হেরে যাব? আমি মোহাম্মদপুর থেকে গাবতলী হয়ে মিরপুর ১ দিয়ে গণভবনে যাচ্ছিলাম। ফোনে পুরো আন্দোলনের সবকিছু। কিন্তু পথে পথে পুলিশের তল্লাশি। রাস্তায় এক চায়ের দোকানে দেখলাম, সেনাপ্রধান বক্তব্য দিচ্ছেন, ‘হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।’ আমি পাগলের মতো রাস্তায় নেমে দৌড়াচ্ছি। নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, এটা কি আসলেই সম্ভব?

আমরা এটি সম্ভব করেছি। ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের গণমানুষের সঙ্গে যে প্রতারণা হয়েছে, সেখান থেকে নতুনভাবে একটা এজমালি বাংলাদেশ গড়ার পথ অবশেষে খুঁজে পেয়েছি আমরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *