কারফিউর দিনগুলোতে কার্টুন | প্রথম আলো


৫ আগস্ট সকাল। সবকিছু থমথমে। নিউজ চ্যানেলও একই খবর লুপে ফেলে রিপিট করছে। বাইরে কারফিউ, ছাত্রলীগ নেতারা রক্তের হোলি খেলার ঘোষণা দিয়েছেন। শুট অ্যাট সাইট বিদ্যমান। হঠাৎ আমার বন্ধুদের ফোন, উত্তরা থেকে। তারা সবাই রাস্তায় নামছে কারফিউ অমান্য করে। এই আন্দোলনের মূল যে শক্তি, তার মূলে আছেন এমন গণমানুষ। কোনোভাবেই যাঁর আন্দোলনে নামার কথা নয়, তিনিও ভয়ানক সিরিজ হত্যাকাণ্ড দেখে রাস্তায় নেমে গেছেন। ওদিকে টেলিভিশনে দেখা যাচ্ছে, বেলা দুটোয় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। তখনই বুঝে ফেললাম, শেখ হাসিনা আর নেই। খুব সম্ভবত এ মুহূর্তে তাঁর নিরাপদে দেশ ছাড়ার ব্যবস্থা চলছে। সে সময়ই একটি কার্টুন আঁকি এবং ফেসবুকে আপলোড করি। আশ্চর্য, বিকেল নাগাদ সত্য হয় আমার কথা! 

৬ আগস্ট নিউ এজ–এ ছাপা হয়েছিল ‘য পলায়তি, স জীবতি’। এটি সংস্কৃত শ্লোক। তবে এখানে এ বাক্য দিয়ে আমি নেতা–কর্মীকে ফেলে শেখ হাসিনার সপরিবার পলায়ন বুঝিয়েছি। ৫ আগস্ট কাজটি যখন করছিলাম, রাস্তায় তখন আনন্দমিছিল; শাহবাগ, বাংলামোটর, মিরপুর রোডে মানুষের ঢল। তবে সেখানে শামিল না হয়ে সরাসরি আমি চলে এসেছিলাম অফিসে। বেশ তাড়াহুড়ো করেই কাজটি করেছিলাম, যা পরবর্তী সময়ে দেয়ালে দেয়ালে অনেকবার নতুন করে এঁকেছেন তরুণেরা। এমনকি জুলাই অভ্যুত্থানের কার্টুন নিয়ে ড. শহিদুল আলমের সম্পাদনার বইটির (জুলাই আপরাইজিং: স্যাটায়ার অ্যান্ড রিডিকুল কার্টুন দ্যাট ডিমলিশড আ ডিক্টেটর) প্রচ্ছদ হিসেবেও এটি নির্বাচিত হয়েছে।

শেষে করি এ কথা বলে যে আমরা যারা রাজনৈতিক কার্টুন আঁকি, তাঁরা জানি ন্যায়ের লড়াইটা কী; আমাদেরলড়াইটা আসলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সেটা যে-ই করুক।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *