এদিকে ১৯৭৯ সালে সাদ্দাম হোসেন ইরাকের প্রেসিডেন্ট হন। আর ১৯৮০ সালের জানুয়ারিতে আবদুল হাসান বনি-সদর ইরানের প্রথম প্রেসিডেন্ট হন। ওই বছরের ৮ মার্চ থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়। ইরান তখন ইরাক থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেয়। এপ্রিলে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারিক আজিজ এবং সংস্কৃতি ও তথ্যমন্ত্রী লতিফ নুসেইফ আল জসিমকে হত্যার ঘটনায় উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। একই বছরের মে ও আগস্ট মাসে ইরাক-ইরান সীমান্তে সংঘর্ষের মাত্রা বেড়ে যায়।
১৯৮০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আলজিয়ার্স চুক্তি বাতিল করে ইরাক শাত আল-আরব জলপথের ওপর পূর্ণ সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করলে পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর শেষ পর্যন্ত ২২ সেপ্টেম্বর ইরানে হামলা শুরু করে ইরাকি বাহিনী।
কলাম্বিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অনলাইনের (সিআইএও) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানে হামলার পেছনে ইরাকি বাহিনীর অন্যতম একটি লক্ষ্য ছিল দেশটির আবাদান ও খুজিস্তান অঞ্চলের তেল শোধনাগারের দখল নেওয়া। তবে যুদ্ধের প্রথম দিন দুই পক্ষের কেউই কারও তেলক্ষেত্রে হামলা চালায়নি। ধারণা করা হয়, প্রতিশোধ হামলার আশঙ্কায় দুই পক্ষের কেউই আবাদান কিংবা বসরায় একে অপরের তেলক্ষেত্রে আঘাত করেনি। প্রথম দিন আবাদান তেল শোধনাগারের আশপাশে লড়াই চললেও শোধনাগারটি অক্ষত ছিল। তবে পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর আবাদানে হামলা শুরু করে ইরাক। একের পর এক হামলায় সেখানকার তেল ও গ্যাসের ট্যাংকগুলো যেন আগুনের কুণ্ডলীতে পরিণত হয়। ইরান তখন ঘোষণা দেয় হরমুজ প্রণালি ব্যবহার করে কোনো জাহাজকে শত্রুপক্ষের বন্দরগুলোর দিকে যেতে দেওয়া হবে না। ইরাকি বাহিনীর হামলায় আবাদানে তেল শোধনাগারটি বন্ধ হয়ে যায়।
যুদ্ধের শুরুতেই সৌদি আরব ও কুয়েত ইরাককে সমর্থন দেয়। সুন্নি–অধ্যুষিত আরব দেশগুলো ইরাককে প্রচুর আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। তারা ইরাকের নেতা সাদ্দাম হোসেনকে ইরানের শিয়াপন্থী নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে বিবেচনা করছিল। পশ্চিমা দেশগুলো ইরাকের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছিল।