দেখলাম ফুলভর্তি একটা মহুয়াগাছ। দৃশ্যটা আমাকে কেন জানি অবাক করেছে। মনে হলো, আচ্ছা গাছটি এখানে কেন? এ তো জঙ্গলে থাকার কথা। এটা হবে জঙ্গলের রানি। এখানে, এই রেলস্টেশনে তো একে মানাচ্ছে না। জঙ্গলমহলেই তাকে মানায়। আর সেখানে বসেই লিখে ফেললাম এই কবিতা। “হাই দ্যাখ গো/ তুই ইখানে কেনে/ ও তুই লাল পাহাড়ির দ্যাশে যা/ রাঙা মাটির দ্যাশে যা হেথাকে তুকে মানাইছে নাইরে/ ইক্কেবারে মানাইছে নাইরে…।”’ তখন পর্যন্ত গানটির নাম ছিল ‘শ্রীরামপুর ইস্টিশনে মহুয়াগাছটা’। বাউলেরা অরুণ কুমার চক্রবর্তীকে গানটি বড় করার অনুরোধ জানালে তিনি ‘লাল পাহাড়ির দ্যাশে যা’ নামে আবার লেখেন এবং নতুন করে সুর করেন।
অরুণ কুমার চক্রবর্তী সারা জীবনই বাউলের মতো চলাফেরা করেছেন। মাঝেমধ্যে বহিমিয়ানের মতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন। কর্মজীবনে প্রকৌশল বিভাগের উচ্চপদে চাকরি করা অরুণ চক্রবর্তীর চলাফেরা মূলত চিত্রশিল্পী, হকার, ফুল বিক্রেতা, মাছ বিক্রেতা, বইয়ের দোকানদার, ফুচকাওয়ালাদের সঙ্গে। এমনটি নিজেই বলেছেন এই প্রতিবেদককে। তিনি বলছিলেন, ‘জানেন তো, আমি সারা জীবন তো বাইরে বাইরে কাটিয়েছি। হিমালয় থেকে কন্যাকুমারিকা, সোমনাথ থেকে কোহিমা। বাউলের মতো ঘুরে বেড়ানোতেই আমার আনন্দ।’ তবে মাঝেমধ্যে একদম নির্জনতা বেছে নেন। মেডিটেশন করতেন নিয়মিত। এ কারণে নির্জনতাকেই কিছুদিনের জন্য নির্ধারণ করে ফেলেন। ওই সময়টা কারও সঙ্গে যোগাযোগ থাকে না।