গতকাল রোববার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আমন্ত্রণে ইউরোপের নেতারা, ন্যাটোর মহাসচিব জেনারেল মার্ক রুট এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো লন্ডনে সমবেত হয়েছিলেন। ইউক্রেনের জন্য সমর্থন জোরদার করা এবং ট্রাম্পের সমর্থন জয় করে যুদ্ধ অবসানের একটি পরিকল্পনা তৈরির প্রতিশ্রুতি তাঁরা দিয়েছেন।
ইউরোপীয়রা বুঝতে পারছেন যে (যেটা ট্রাম্প প্রশাসন বুঝতে পারছে বলে মনে হয় না) ইউক্রেন এমন একটি শান্তি চুক্তি চায়, শর্তের কারণে যেন সেটা নষ্ট না হয়ে যায়। পুতিনের ভাবনায় রয়েছে পুরো ইউক্রেন; ন্যাটো কিংবা ইউক্রেনের ভূমির অংশবিশেষ নয়। চুক্তির পরও ইউক্রেন যদি স্বাধীন থাকে, ইউক্রেনের যদি নিজস্ব সেনাবাহিনী থাকে, তাহলে পুতিন সেখানেই থেমে যাবেন না। তিনি এখন ইউক্রেনের একখণ্ড ভূমি নিয়ে সাময়িক বন্দোবস্তে আসবেন, যাতে করে ভবিষ্যতে গোটা ইউক্রেনকে নিজের করায়ত্তে নেওয়া যায়। ন্যাটো যদি পুতিনের চিন্তার কারণ হতো, তাহলে তিনি ২০২৩ সালে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তিকে এত সহজে মেনে নিতেন না। বর্তমানে ইউক্রেনের সীমানা থেকে মস্কোর দূরত্বের চেয়ে সেন্ট পিটার্সবুর্গ থেকে ন্যাটোর সীমানা আরও কাছাকাছি।
পুতিন স্বাধীন ইউক্রেনকে সহ্য করতে পারেন না। তার কারণ হলো, গত ৩০০ বছরে তাঁর পূর্বসূরিদের কেউই এটা মেনে নিতে পারেননি। আরও একটি কারণ হলো, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেন যদি সফল হতে পারে, তাহলে সেটা পুতিনের স্বৈরতান্ত্রিক মডেলের শাসনের ওপর সরাসরি হুমকি তৈরি করবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিকে তাঁর পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছেন। তিনি চান যেকোনো মূল্যেই সেটা সফল করতে।
বাইডেনের আমলে আফগানিস্তানে যেটা ঘটেছে, ইউক্রেনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প সেটা হতে দিতে পারেন না। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার ফাঁদে নিজেই আটকা পড়ে ট্রাম্প তড়িঘড়ি একটা সাফল্য অর্জন করতে চাইছেন। সেখান থেকেই গত সপ্তাহে তিনি জেলেনস্কিকে আক্রমণ করেছেন।