পাহাড়ি ১৩টি জনগোষ্ঠীর প্রত্যেকেরই স্বতন্ত্র ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। তাঁদের বসবাসের জনবিন্যাসেও বৈচিত্র্য দেখা যায়। কোনো জনগোষ্ঠী পাহাড়ের চূড়ায়, কেউ আবার পাহাড়ের ঢালে এবং কেউ আবার নদীর তীরে থাকতে পছন্দ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম জেলা প্রশাসক ক্যাপ্টেন টি এইচ লুইন লিখেছেন, এ অঞ্চলের পাহাড়িরা খ্যংসা বা নদীতীরের বাসিন্দা এবং তংসা বা পাহাড়ের বাসিন্দা নামে দুই ভাগে বিভক্ত। চাকমা ও মারমারা খ্যংসা এবং অন্যরা সবাই তংসা দলের। দেশের সবচেয়ে উঁচু তাজিংডং, কেওক্রাডাং ও সিপ্পী পাহাড়ের শীর্ষদেশে বম, ম্রো, লুসাই, পাংখোয়া ও খুমিদের বসবাস দেখা যায়। চিম্বুক, মিরিঞ্জা, রংরাং, ক্রিস্টং, বড়মদকসহ মাঝারি পাহাড়গুলোতে বেশি সংখ্যায় ম্রো, খুমি, ত্রিপুরারা বসবাস করেন। অপেক্ষাকৃত কম উঁচু পাহাড়ে তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, খেয়াংদের বসবাস গড়ে উঠেছে। চাকমা ও মারমাদের বসবাস পাহাড়ের পাদদেশে ও নদী-খালের তীরে।
ভাষার হালচাল
জেলা পরিষদের আইনে বান্দরবানে ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কথা বলা হয়েছে। মণিপুরি ও রাখাইনের কথা আইনে নেই। জেলা পরিষদে আইনে স্বীকৃত ১১টি জনগোষ্ঠীর ভাষা উল্লেখ করা হয়েছে মূলত ৮টি। কিছু ধ্বনিগত পার্থক্য থাকলেও বম, পাংখোয়া ও লুসাইদের ভাষা প্রায় একই। চাকমা–তঞ্চঙ্গ্যা ও মারমা–রাখাইনদের ভাষা ও বর্ণমালাও অভিন্ন। রাঙামাটি কেএসআইয়ের সাবেক পরিচালক ও ভাষা গবেষক সুগত চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় ভাষা বইয়ে পাহাড়ে তিনটি ভাষা পরিবারের জনগোষ্ঠী রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যার একটি ভাষা পরিবারের। বম, পাংখোয়া ও লুসাইরা আরেকটি ভাষা পরিবারের। অন্য পরিবারটিতে রয়েছে মারমা, ম্রোসহ অন্যরা।