মূলধারার মিডিয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, বিশেষ করে টুইটারেও গুজব ছড়াতে দেখা গেছে। ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ডিসমিস ল্যাবের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বাবা বানারস’ নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ‘চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৫০ জন হিন্দু নিহত ও আহত এবং ৬ জন হিন্দু নারীকে অপহরণ’ করার মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হয়।
‘বাবা বানারস’–এর মতো অসংখ্য অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ও টেলিগ্রামে ভুয়া খবর ছড়িয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা বয়ান তৈরি করা হচ্ছে।
গত ২৬ নভেম্বর আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার পর তাঁকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আইনজীবী হিসেবে ভুল ও অপতথ্য প্রচার করে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, হিন্দুস্তান টাইমসসহ অসংখ্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এর আগে ৫ আগস্টের পরে রাজনৈতিক ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন মিডিয়া ও বিভিন্ন ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘর-মন্দিরে হামলার ঘটনাগুলোকে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরোনো ঘটনাকে নতুন বলে প্রচার করে, অন্য দেশের বা অন্য ঘটনার অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ও অপতথ্য চালানো হয়।
ডয়চে ভেলে (৭ আগস্ট ২০২৪) ও বিবিসি বাংলার (১১ আগস্ট ২০২৪) অনুসন্ধানে দেখা যায়, মন্দিরে, দোকানপাটে হামলা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার অসংখ্য মিথ্যা দাবি ও ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়।
এসব ভুয়া, অতিরঞ্জিত ও অপতথ্য প্রচারের কারণে একদিকে যেমন ঘৃণার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তেমনি সত্যিকারের ঘটনাগুলোও তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। পুরো বিশ্বে ভারত অপতথ্য ও ভুয়া তথ্যের ফলে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে নিয়ে যে অপতথ্য ও ভুল তথ্য ভারতে প্রচার করা হচ্ছে, তা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে দেশটির রাজনীতিবিদ, নাগরিক সমাজ ও জনগণকেও প্রভাবিত করছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ও সহকারী দূতাবাসে হামলা এই বিদ্বেষেরই ফলাফল। অপতথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন যে শুধু ভারতের জনগণ ও রাজনীতিবিদদের কাছেই যাচ্ছে তা নয়, বিশ্বের নানা দেশের আইনপ্রণেতাদেরও বিভ্রান্ত করছে।