এরপর তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন জেড ফোর্সের অধীন থাকা প্রথম ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় জিয়াউদ্দিনকে। কামালপুরের দ্বিতীয় পর্বের যুদ্ধ, শ্রীমঙ্গলের কেজুরিছড়া ঘাঁটি, ফুলতলা ঘাঁটি, ধলই বিওপি, আটগ্রাম, কানাইঘাট এবং শেষে সিলেটের এমসি কলেজের কাছে পাকিস্তানি বাহিনীকে ধরাশায়ী করে সিলেটের উপকণ্ঠে পৌঁছান। তাঁর এই বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাঁকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। উল্লেখ্য, ১ ইস্ট বেঙ্গলের সাহসী সৈনিক ‘বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান’ ধলই বিওপির যুদ্ধে শহীদ হন।
স্বাধীনতার পর ১ ইস্ট বেঙ্গল সিলেট থেকে ঢাকা সেনানিবাসে চলে আসে। কিছুদিন পর জিয়াউদ্দিন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং ১৯৭২ সালের এপ্রিলে ঢাকা সেনানিবাসের ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধিনায়ক (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) নিয়োজিত হন। মার্চ মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সফরে এলে জিয়াউদ্দিন তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়েছিলেন। ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিমানবাহিনীর একদল উচ্ছৃঙ্খল সেনার বিদ্রোহ দমন করেন এবং যুদ্ধোত্তর সেনাবাহিনীর অফিসারদের প্রশিক্ষণে গঠিত অস্থায়ী ‘ব্যাটেল স্কুল’ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।
লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশে সে এক অদ্ভুত ও অস্থির সময়। একদিকে নতুন দেশ গড়ার অযুত স্বপ্ন, অন্যদিকে ভারতীয় আধিপত্যের মেঘ, নৈরাজ্য, রক্ষী বাহিনী গঠন, শাসক দলের অনৈতিক কর্মকাণ্ড, হতাশা ও স্বপ্নভঙ্গের হাহাকার…। সমাজের এই অস্থিরতা, নৈরাজ্য ও হতাশা জিয়াউদ্দিনকেও স্পর্শ করেছিল।