মিয়াজাকি আম-মাত্রই যে লাখ টাকা মূল্যের হবে, তা কিন্তু নয়। এমন দাম হওয়ার জন্য এই আমকে পেতে হয় ‘তাইয়ো নো তামাগো’ তথা ‘সূর্যডিম’ টাইটেল। কিছু নির্দিষ্ট মানদণ্ড উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে এই খেতাব, (বলা ভালো ‘ছাড়পত্র’) দেয় মিয়াজাকি অ্যাগ্রিকালচারাল ইকোনমিক ফেডারেশন। প্রতিষ্ঠানটি খুব নিখুঁতভাবে আমের সার্বিক গুণাগুণ পরীক্ষা করে দেখে। প্রথমেই আমের রং পরীক্ষা করা হয়। দেখা হয় আমের লাল রঙের ফাঁকে কোথাও কোনো সবুজ দাগ আছে কি না এবং কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ লাল রং হয়েছে কি না। রং-পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মাপা হয় এর ওজন। কমপক্ষে ৩৫০ গ্রাম ওজন হলে তবেই সেটি পরবর্তী ধাপ, অর্থাৎ স্বাদ-পরীক্ষার জন্য বিবেচিত হবে। স্যাকারিমিটার অনুযায়ী আমটিতে সুগারের পরিমাণ থাকতে হবে অবশ্যই ১৫ শতাংশ বা তার বেশি। এ সবকিছুতে উত্তীর্ণ হলে দেওয়া হয় মর্যাদাপূর্ণ মিয়াজাকি সনদ।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমগুলোকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। প্রথম দুটি শ্রেণিকে দেওয়া হয় ‘তাইয়ো নো তামাগো’ খেতাব। আর এই দুই শ্রেণির মিয়াজাকিই মূলত বিক্রি হয় এমন আকাশছোঁয়া দামে। সূত্র বলছে, মাত্র ১০ শতাংশ আম এই সম্মানজনক সনদ পেয়ে থাকে। বাকি মিয়াজাকির মূল্য মোটামুটি সাধারণের ক্রয়সীমার মধ্যেই থাকে।
বেশ কয়েক বছর ধরে ভারত বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মিয়াজাকি আমের চাষ হচ্ছে। অবশ্য এসব মিয়াজাকির মূল্য অতটা নয়। যদিও ভারতে বছর দুয়েক আগে এক কেজি মিয়াজাকি আড়াই লাখ রুপিতেও বিক্রি হয়েছে। তবে সে দেশে সাধারণত কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ রুপিতে এই আম পাওয়া যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে এই আমের উৎপাদন বেশ ভালো। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অল্প কিছু অঞ্চলেও এর চাষ হচ্ছে। এ দেশে কমবেশি দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা কেজিতে পাওয়া যায় এই আম। প্রশ্ন জাগতে পারে, এত কমে কীভাবে? ওই যে, সূর্যডিমের খেতাব!
সূত্র: জাপানিজ ফুড গাইড, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ডেইলি স্টার