শফিকুর রহমান: এখানে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পাকিস্তান আন্দোলনের (১৯৪৭) যাঁরা নেতা ছিলেন, কর্মী ছিলেন, তাঁদের অন্তরে ধারণ করি। তাঁদের মধ্যে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন, ভাসানী সাহেব ছিলেন, গোলাম আযম সাহেব ছিলেন, অনেকেই ছিলেন। আমি তাঁদের সবাইকে শ্রদ্ধার সঙ্গে অন্তরে ধারণ করি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন যাঁরা সংগঠিত করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন, অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদেরও আমি ধারণ করি। সাতচল্লিশ কখনো বায়ান্ন নয়, বায়ান্ন কখনো সাতচল্লিশ নয়। আবার একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, তাঁদের পজিশন আর চব্বিশের পজিশন এক নয়। দস্তুর মতো একটা বাহিনী, সেনাবাহিনী যুদ্ধ করেছে দেশবাসীর বিরুদ্ধে এবং যাঁরা যুদ্ধ করেছেন, তাঁরা দেশের মাটিতে টিকতে পারেননি। বাধ্য হয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে। সেখান থেকে তাঁরা যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধের ফিনিশিংটা তাঁদের হাতে হলে শতভাগ আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতাম। ফিনিশিংটা হয়েছে অন্য জায়গায়। যার কারণে যুদ্ধের ফসলও চলে গেছে ওই জায়গায়, সঙ্গে সঙ্গে যে ফসলটা পাওয়ার কথা ছিল।
এখন আমি যদি বলি, চব্বিশ একাত্তরের সমান, এটা তো ঠিক হবে না। চব্বিশ চব্বিশই, একাত্তর একাত্তরই। একাত্তরে পাকিস্তানের বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি এবং আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর চব্বিশে এসে স্বাধীন বাংলাদেশে যে বৈষম্য এবং যে ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছিল, সেটার হাত থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। নতুন কোনো বাংলাদেশ হয়নি। তখন পূর্ব পাকিস্তানের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ হয়েছে। এখন তো কোনো নাম পরিবর্তন হয়নি। সেই দেশ, মাটি, সেই মানুষগুলোই আছে। দুইটাকে এক করলে হবে না। কিন্তু চব্বিশের গুরুত্বটা কম নয়।