সাম্বার গহিন বনের বাসিন্দা। ঘাস, লতাপাতা, ফলমূল আহার করে। একাকী কিংবা জোড়ায় বিচরণ করতে দেখা যায়। সাধারণত রাতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তবে যে বনে বাঘ বা চিতার মতো বড় আকারের শিকারি প্রাণী নেই, তেমন বনাঞ্চলে দিনেও আহারের জন্য বেরিয়ে পড়ে। পানির খোঁজে বহুদূর পর্যন্ত চলাচল করে। শীতকালে পাহাড়ে পানির সংকট থাকে, ফলে পানির জন্য পাহাড়ি ছড়ায় ছড়ায় ঘুরে বেড়ায়।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব দেশের বনাঞ্চলে সাম্বারের দেখা মেলে। অতীতে বাংলাদেশের সব পাহাড়ি বনাঞ্চলে সাম্বারের উপস্থিতি ছিল। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের দু–একটি খণ্ড বন ছাড়া দেশে এই প্রাণী আর কোথাও দেখা যায় না। এশীয় বনাঞ্চলে এটি সংকটাপন্ন হলেও বাংলাদেশে সাম্বারকে মহাবিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রাখা হয়েছে। চোরা শিকার ও বাসস্থানের অবক্ষয়ের কারণে এই প্রাণী দিন দিন বিলুপ্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আকারে বড় হওয়ায় শিকারিদের পছন্দের তালিকায় এটি ওপরের দিকে থাকে।
গত বছর কাসালং বনে অল্প পরিসরে কিছু স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা ট্র্যাপ স্থাপন করি। অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে ক্যামেরায় সাম্বারের ছবি দেখে আনন্দে আপ্লুত হই। বারবার ছবিটি দেখি, সত্যিই ক্যামেরায় সাম্বার হরিণ ধরা পড়েছে! কারণ, আমাদের কোনো প্রাকৃতিক বনে এই হরিণ সরাসরি দেখার সৌভাগ্য হয়নি। ফলে এটি যে আমাদের কোনো বনে এখনো আছে, তা সহজে মানসপটে ভাসে না। ক্যামেরা-ট্র্যাপে ছবি পাওয়ার কয়েক মাস পরেই ধনময় চাকমার পাঠানো সাম্বারের বাচ্চার ছবিটি দেখে মনটা বিষণ্নতায় ছেয়ে যায়। সত্যিই কি আমাদের জীবদ্দশায় বিলুপ্ত হয়ে যাবে এমন সুন্দর প্রাণীটি?