কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে। ওই প্রতিবাদপত্রে বাংলাদেশে অতিসম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ হয়েছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক স্ট্যাটাসের (যা পরে মুছে ফেলা হয়েছে) বিষয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি মানচিত্র পোস্ট করেন, যেখানে বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো যুক্ত রয়েছে। ‘বিজয় এসেছে, তবে সামগ্রিক নয়/ মুক্তি এখনো বহুত দূরে!’ শিরোনামের ওই পোস্টের একাংশে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা ভূগোল ও বন্দোবস্তে আটকা পড়ে গিয়েছি। তাই আমরা বলছি, নূতন ভূগোল ও বন্দোবস্ত লাগবে।’
কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত চার মাসের বেশি সময় ধরে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নানা পর্যায়ে টানাপোড়েন, আগরতলার বাংলাদেশ মিশনে অভূতপূর্ব হামলা, দিল্লি, কলকাতা ও মুম্বাই মিশনের কাছাকাছি এসে সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে বিক্ষোভ, ঢাকায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলবের মতো ঘটনা ঘটেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক ঢাকায় হয়েছে। বিক্রম মিশ্রি ঢাকা সফরের সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। অর্থাৎ ভারতও সম্পর্কের ইতিবাচক উত্তরণে আগ্রহী। এমন এক প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে আলাপ– আলোচনার প্রক্রিয়া চালু থাকা প্রয়োজন। আবার ভারতের জনপরিসরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনকে উপজীব্য করে অপতথ্য ও ভুল তথ্যের বিস্তার থামানো জরুরি। সম্পর্কটা যেন সমতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে পরিবর্তিত সময়ের দাবিকে মেনে নিয়েই হয়, সেটাই বাঞ্ছনীয়। পাশাপাশি সম্পর্কের এই ক্রান্তিলগ্নে এসে কোনো পক্ষের মন্তব্য যাতে নতুন করে অস্বস্তির সৃষ্টির সুযোগ তৈরি না করে, সে ব্যাপারেও সচেষ্ট থাকা উচিত।