২০০৫ সালে নগুগির সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়। এর বহু আগে থেকেই আফ্রিকান সাহিত্যধারার একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক ও নোবেল পুরস্কারের দীর্ঘদিনের দাবিদার ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে পরিচয়ের পর দ্রুতই আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়, তাঁর লেখালেখির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে রয়েছে শিক্ষাদানের ব্যাপারটি। এর সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে ছিল তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার।
নগুগি প্রাঞ্জল হাসিমুখ, ক্লান্তিহীন হাসি আর উচ্ছ্বাসের আড়ালে ছিল এক গভীর ক্ষোভ, যা তাঁর শরীর ও মনের ক্ষতচিহ্নগুলোরই প্রতিচ্ছবি। শৈশব, কৈশোর ও যৌবনে চরম অপরাধমূলক শাসনব্যবস্থার নির্মমতা ও সহিংসতার চিহ্ন তিনি বয়ে চলেছিলেন।
নগুগির বধির ভাইকে ব্রিটিশরা গুলি করে হত্যা করেছিল। তার কারণ হলো চেক পয়েন্টে তিনি ব্রিটিশ সেনার থামার নির্দেশনা শুনতে পাননি। ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিকে মাউ মাউ বিদ্রোহ (কেনিয়ার সশস্ত্র বিপ্লবীদের সঙ্গে ব্রিটিশ প্রশাসনের লড়াই) তাঁর অন্য ভাইদের বিপরীত দুই পক্ষে ভাগ করে দিয়েছিল।
এ দুটি ঘটনা তাঁর মধ্যে গভীরভাবে এই বোধকে প্রোথিত করে দিয়েছিল যে সহিংসতা ও বিভাজন হলো ঔপনিবেশিকতাকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার দুটি প্রধান চালিকা শক্তি। এমনকি স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মেট্রোপোলের (ঔপনিবেশিক কেন্দ্রের) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরও সেটা সত্য।