‘ধূসর পাহাড়ের’ শিল্পী জয়তুর জয়


জয়তুর পাহাড় বিবর্ণ কেন? শিল্পীর জবাব, ‘এখন পাহাড় অনেক উন্নত। পাহাড়ের সীমানায় এখন যান চলাচলের রাস্তা। এখন পাহাড়ের চূড়ায় উঠে সুইমিংপুলের শীতল জলে সাঁতরানো যায়। কিন্তু তার বদৌলতে পাহাড়িরা কী পাচ্ছে?’

জয়তু এসব প্রশ্নই তোলেন তাঁর ছবিতে। ওএইচসিএইচআরের যে পুরস্কার জয়তুসহ আটজন শিল্পী পেয়েছেন, তাঁরা সবাই-ই নিজ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। ওএইচসিএইচআর বলেছে, এসব শিল্পী শুধু শিল্পী নন, একেকজন মানবাধিকারকর্মী। তাঁরা তাঁদের আত্মপরিচয়কে উন্মোচন করেন রঙে, ভাস্কর্যে নানা ঢঙে।

‘ইন্টারন্যাশনাল মাইনরটি আর্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’–এর ‘ইয়ুথ’(তরুণ) ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন জয়তু। তাঁর ছবি প্রসঙ্গে ওএইচসিএইচআরের চিত্র প্রতিযোগিতার বিচারকেরা বলেছেন, ‘তাঁর শিল্পকর্মে পার্বত্য চট্টগ্রামের না–বলা মর্মান্তিক নানা কথা, পাহাড়ের মানুষের নিরন্তর সংগ্রামের চিত্র ফুটে ওঠে।’

জয়তুর ছবির সঙ্গে অনেক আগে থেকেই পরিচিত আরেক গুণী পাহাড়ি শিল্পী কনক চাঁপা চাকমা। তিনি বলছিলেন, ‘পাহাড়ের ধ্বংস হতে থাকা প্রকৃতি, বাস্তুতন্ত্র—এই সবই ও তুলে ধরে ভিন্নমাত্রায়। দেখবেন ওর সব ছবি ত্রিভুজাকৃতির। অর্থাৎ একটা পাহাড়ের আদল ও দেওয়ার চেষ্টা করে ফ্রেমেও। এটা আমি খুব কম দেখেছি।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবন ও প্রকৃতিকে রংতুলিতে তুলে ধরার ইতিহাস একেবারে নতুন নয়। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে শিল্পী চুনীলাল দেওয়ান এর পথিকৃৎ। তিনি ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সহকর্মী। চুনীলাল দেওয়ান কলকাতা আর্ট কলেজেরও ছাত্র ছিলেন। আর জয়তু যে পুরস্কার পেয়েছেন, এর আগে তুফান চাকমা নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও একজন শিল্পী পেয়েছিলেন। চিত্রকলার ক্ষেত্রে তুফান ও জয়তুদের এসব আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাহাড়ের তরুণদেরও আকৃষ্ট করবে বলেই মনে করেন শিল্পী কনক চাঁপা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *