তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণ নিতে চায় সরকার, চেয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা


২০১৬ সালে সমীক্ষা শুরুর মধ্য দিয়ে তিস্তা প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রকল্পের নথি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রকল্পের আওতায় নদীর ১০২ কিলোমিটারে খনন (ড্রেজিং) করা হবে। এতে নদীর গভীরতা প্রায় ১০ মিটার বাড়বে। ফলে বন্যার পানিতে নদী-তীরবর্তী বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হবে না। ভূমি উদ্ধার ও উন্নয়ন করা হবে ১৭১ বর্গকিলোমিটার এলাকায়। বাঁধ নির্মিত হবে ২০৩ কিলোমিটার। এ ছাড়া চর খনন, নদীর দুই পাড়ে স্যাটেলাইট শহর নির্মাণ, বালু সরিয়ে কৃষিজমি উদ্ধার করা হবে।

পাউবো বলছে, প্রকল্পের আওতায় গ্রোয়েন (বাঁধ) নির্মাণ ও তীর প্রতিরক্ষার কাজের মাধ্যমে নদীভাঙন রোধ হবে। বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতকাজের মাধ্যমে বন্যার ঝুঁকি কমবে। ড্রেজিংয়ের (খনন) মাধ্যমে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও নদী পুনরুদ্ধার হবে এবং শাখানদীগুলোর নাব্যতা রক্ষা করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নদীর দুই পাড়ে থানা, কোস্টগার্ড ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থাকবে। এ ছাড়া বাঁধের দুই পাশে সমুদ্রসৈকতের মতো মেরিন ড্রাইভ, হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ ও পর্যটন নগরী, পরিকল্পিত শহর, নগর ও বন্দর গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো।

পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত গত ২৮ জুলাই প্রথম আলোকে বলেন, তিন কারণে বাংলাদেশে তিস্তা প্রকল্পটি খুবই দরকার। এক. বর্ষার সময় তিস্তা অববাহিকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা। দুই. বর্ষার আগে-পরে নদীর ভাঙন কমানো। তিন. শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানির প্রবাহ বাড়ানো। তিনি বলেন, ‘কারিগরি দিক দিয়ে জটিল এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শক সভা করার কথা ছিল। তবে সেটা হয়েছে বলে শুনিনি। অন্তত আমাকে কেউ ডাকেনি। হয়তো আমাকে উপযুক্ত মনে করেনি।’

আইনুন নিশাত বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রচুর টাকা দরকার। যারা এগিয়ে আসবে, সরকার সব দিক বিবেচনায় তাদের কাছ থেকেই ঋণ নেবে। চীন শুধু অর্থ নয়, প্রযুক্তি নিয়ে আসবে। তবে তিনি মনে করেন, তিস্তা প্রকল্পে চীন যেকোনো ধরনের কারিগরি কাজ করুক না কেন, ভারত না দিলে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানিপ্রবাহ বাড়বে না। ভারতের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *