গত বছর আগস্ট মাসে দেশে একটা ওলট-পালট ঘটে গেছে। আমরা ভাবছি, নতুন করে স্বাধীন হয়েছি। সুতরাং আগের মতো করে এ দেশ চলবে না, চালাতে দেওয়া হবে না। সবাই যে এক রকম ভাবছেন, তা বলা যাবে না। অনেকেই বদলাচ্ছেন, অনেকে আছেন আগের মতোই। এত ঝড়ঝাপটা গেল, এত মানুষ মরল, তাতে তাঁদের ভ্রুক্ষেপ নেই। ক্ষমতার রাজনীতিতে সহসা গুণগত পরিবর্তন আসবে, এমনটি জোর গলায় বলা যাচ্ছে না।
সংস্কার আগে না নির্বাচন আগে, এ নিয়ে কথার ফুলঝুরি দেখছি। এর মধ্যে আরেকটা ঝগড়া ঢুকে গেছে—আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, নাকি সংসদ নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনে যাঁরা সরকার গঠন করার ব্যাপারে আশা রাখেন, তাঁরা চান সংসদ নির্বাচন হোক আগে। নির্বাচিত সরকারের অধীন হোক স্থানীয় সরকার নির্বাচন।
একটা উদাহরণ দিই। এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংসদ নির্বাচনের আগে উপজেলা নির্বাচন করতে চেয়েছিল। বড় দলগুলো, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এতে রাজি হয়নি। ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে উপজেলা নির্বাচনের আয়োজন করে। মারদাঙ্গা করে বেশির ভাগ উপজেলায় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীরা জিতে যান। নির্বাচন কমিশন অসহায়ভাবে চেয়ে চেয়ে দেখে। কমিশনের প্রধান এ টি এম শামসুল হুদা সে সময় একটি মন্তব্য করেছিলেন, দলীয় সরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।