গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে এনসিপি সারা দেশে মাসব্যাপী ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে। এরই অংশ হিসেবে গত বুধবার গোপালগঞ্জে কর্মসূচি ছিল। তবে এ কর্মসূচির আগের দিন থেকে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ শীর্ষক প্রচার চালান এনসিপির নেতা-কর্মীরা। এ কারণে টুঙ্গিপাড়া বা গোপালগঞ্জের নাম পাল্টানোকেন্দ্রিক গুজব আরও তীব্র হয় বলে স্থানীয় লোকজন মনে করেন।
এমন প্রচারণা ও মাঠের বাস্তবতা সত্ত্বেও এনসিপির পদযাত্রার দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন দফায় দফায় হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে—তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন জেলা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগের দিন এত লোক জড়ো হচ্ছে শহরে, সেটা কেন স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এল না। গোপালগঞ্জের জায়গায় এমন কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন বা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি কেন ছিল কি না, সে প্রশ্নও সামনে এসেছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এই প্রস্তুতির জন্য গোয়েন্দা তথ্যের অপেক্ষারও দরকার পড়ে না। কোন এলাকায় কোন ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এ বিষয়ে মাঠ প্রশাসনের সাধারণ ধারণা থাকে। এর সঙ্গে অতীত উদাহরণ থাকলে তো আরও বেশি সতর্কতার প্রয়োজন হয়। গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যখন পলায়নপর ছিলেন, তখনো গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করেছিলেন তাঁরা। স্বাভাবিকভাবেই এখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষভাবে ভাবার প্রয়োজন ছিল। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহেরও দরকার ছিল।
এ ছাড়া বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় পুলিশের ওপর হামলা ও তাদের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এর চার ঘণ্টা পর এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা হয়। মাঝে চার ঘণ্টা সময় পাওয়া গেছে। এই সময়ে পার্শ্ববর্তী মাদারীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে বাড়তি পুলিশ সদস্য আনার সুযোগ ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সেখানে নিরাপত্তা প্রস্তুতি ছিল না, তা নয়। সেখানে পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল। তবে এরপরও যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।