মাংস কাটার কাজ দেবে বলে মস্কো থেকে দূরের একটি শহরে আমাদের নিয়ে যান; কিন্তু গিয়ে দেখি, বরফ পরিষ্কারের কাজ। সপ্তাহখানেক সেই কাজই করি। এরপর একদিন গাছ কাটার কথা বলে একজন নারীসহ চারজন এসে আমাদের জঙ্গলে নিয়ে যান। গাছ কাটার কাজ করি চার-পাঁচ দিন। একদিন দেখি, সেখানেই বন্দুকসহ গোলাবারুদ আনা হচ্ছে। তারপর সিভিল পোশাকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসতে শুরু করেন। যাঁরা জঙ্গলে এনেছিলেন, আমাদের রেখে তাঁরা সটকে পড়েন। বুঝতে পারি, আমরা কোনো পক্ষের কাছে বিক্রি হয়ে গেছি।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হলো, আমাদের অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পাঁচজনই গিয়ে কমান্ডারের পায়ে ধরলাম। তাঁকে অনুনয়–বিনয় করে আমাদের ছেড়ে দিতে বললাম। কমান্ডার চুক্তিনামার কথা বলে জিজ্ঞাসা করলেন, কেন আমরা স্বাক্ষর করেছি?
বললাম, আমরা এর কিছুই জানতাম না।
কমান্ডার বললেন, এখন কিছু করার নেই।
২০ মার্চ থেকে পাঁচ দিন বন্দুক লোড আর গুলি করার প্রশিক্ষণ নিলাম। ষষ্ঠ দিনের মাথায় আমাদের ইউক্রেনে রুশ যুদ্ধশিবিরের উদ্দেশে পাঠানো হলো। অন্য বাংলাদেশিদের থেকে আলাদা হয়ে গেলাম।
ইউক্রেনে পৌঁছানোর পর আরও দুই দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলো। মার্চের শেষ দিনে এক অভিযানে পাঠানো হলো। যেখানে গাড়ি রাখা হয়েছিল, সেখানেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলো। গাড়িতে না থাকায় বেঁচে গেলাম। সেদিন অনেকটা পথ হেঁটে ক্যাম্পে ফিরলাম।
এরপর ৭ কি ৮ এপ্রিল ইউক্রেনের লুহানস্ক শহর থেকে দেশটির আরও ভেতরের একটি এলাকায় আবার অভিযানে পাঠানো হয়। অভিযানে আমরা ১২ জন ছিলাম, ফিরে এসেছি ৬ জন।