রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও ‘ব্লক রেইড’


জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে একপর্যায়ে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আন্দোলনকে নজরদারি, গুলি করা ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গোপন পরিকল্পনা করা হয়। আমি পরে জানতে পারি র‍্যাবের ডিজি (মহাপরিচালক) হারুন অর রশিদের পরিকল্পনায় ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় হেলিকপ্টার ব্যবহার এবং অপারেশন পরিচালনা করা হয়। তবে পুলিশপ্রধান হিসাবে আমি উক্ত কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়।’

প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহারের বিষয়ে জবানবন্দিতে বলা হয়, ‘আন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র ও আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলোতে এলাকা ভাগ করে ব্লক রেইড পরিচালনার সিদ্ধান্ত সরাসরি রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আমাকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আন্দোলন দমন করার জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় আমার সামনে অতিরিক্ত ডিআইজি (হেডকোয়ার্টার) প্রলয় জোয়ারদার উপস্থিত ছিলেন। তাঁর মাধ্যমে ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ওই নির্দেশনা জানতে পারেন।’

সাবেক আইজিপির জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, ‘ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি যোগাযোগ ছিল। ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে অতি উৎসাহী ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাইতেন যেকোনোভাবেই হোক আন্দোলন দমন করতে হবে। ১৮ জুলাই (২০২৪) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রকাশ্যে চায়নিজ রাইফেল ব্যবহার করে গুলি করার নির্দেশ দেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে জবানবন্দিতে বলা হয়, সেখানে পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করেনি। মূলত ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশে পুলিশ কাজ করে। ওবায়দুল কাদের ও নানক সাহেব ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে নির্দেশনা দিতেন। তাঁরাসহ কিছু নেতা ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেন।

সরকারকে বিপথে পরিচালিত করে ও আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগপন্থী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ অফিসার সবাই আগ্রহী ছিলেন। ওবায়দুল কাদেরের আগ্রাসী বক্তব্যের ফলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়ে যায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *