শুধু রাজনৈতিক দল নয়, সিভিল সোসাইটির ওপর যে দমন-পীড়ন চলেছে, সেগুলোও থাকতে হবে। স্বাধীন মতামত প্রকাশে বিগত সরকার যে বাধা দিয়েছে, সেগুলোর বর্ণনা থাকতে হবে। উল্লেখ করতে হবে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো ঘৃণ্য আইন করে মানুষকে দিনের পর দিন কীভাবে হয়রানি করা হয়েছে। স্বাধীন সংবাদপত্রের ওপর যে খড়্গ নেমে এসেছিল, সেটিও আসা দরকার। ঘোষণাপত্রে থাকা দরকার দেশ ও দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদকর্মীরা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন।
পাশাপাশি এটিও থাকা দরকার একটি নির্বাচিত সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ধীরে ধীরে কীভাবে একনায়কতন্ত্রের চরমে পৌঁছায় এবং জনগণের শত্রুতে পরিণত হয়। ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে বারবার মানুষকে কীভাবে স্বৈরাচারী সরকার প্রতারিত করেছে, সেটির বর্ণনা থাকতে হবে।
সাবেক সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার লুটপাট, দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার, দলীয়করণ, সন্ত্রাস, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা—এসব উল্লেখ থাকতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ঘোষণাপত্রে যেটি আসতে হবে, তা হলো ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে এই দেশের তরুণসমাজ কীভাবে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে জুলাই-আগস্টে আন্দোলন সফল করেছেন। বিশেষ করে তাঁদের বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের কথা।
এই অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, সেটিও সেখানে আসা দরকার। এ আন্দোলনে রিকশাচালক থেকে শুরু করে সব পেশার মানুষের অবদান উল্লেখ করতে হবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পীসমাজ, সাংস্কৃতিক কর্মী, অভিভাবক-সমাজ, নারীসমাজ, চিকিৎসকসহ অন্যান্য পেশার নাম উল্লেখ করা জরুরি। এ ঘোষণাপত্র পাঠ করে যেন দেশের প্রতিটি মানুষ উপলব্ধি করতে পারেন যে ঘোষণাপত্রে তাঁদের কথা বলা হয়েছে এবং তাঁদের অবদানের কথা স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।